দেশ প্রেম নিয়ে আমাদের দেশে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে চলছে। সেই ১৯৭১ সাল থেকে শুরু করে অদ্যবধি পর্যন্ত এদেশের রাজনৈতিক ময়দান গরম করা, দৃষ্টি আকর্ষণ করা, কিংবা কারও দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্যে দেশপ্রেম শব্দটি খুব ঘনঘন উচ্চারণ হয়ে থাকে। দেশ ও দেশের জনগণের মানবাধিকার, বাক-স্বাধীনতা, নিরাপত্তা, অবকাঠামো, শিল্প বাণিজ্যে উন্নয়ন ইত্যাদি সকল কিছু অর্জনের জন্যই স্বাধীন হয়েছি। আমাদের ভাগের ভাত আর কেউ খেতে আসবে না। আমাদের দেশের টাকা কেউ জোর করে নিয়ে যাবে না এটাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। স্বাধীন হয়ে আমরা আমাদের মত করে দেশ চালাবো, কারো রক্ত চক্ষুকে ভয় পাবো না, কোন আধিপত্যবাদকে সহ্য করবো না। সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, আগ্রাসন মেনে নেব না, এটাই ছিল স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য। এরই নাম দেশপ্রেম।
স্বাধীনতার ঊষালগ্ন থেকেই গরীবের সুন্দরী বউ এর মত অবস্থা হয় আমার এই সুজলা-সুফলা, ধানে-ধন্য ভরা দেশের। কারণ আমার প্রতিবেশী এত বিত্তবৈভব সম্পন্ন যে আমি তার দিকে দৃষ্টি দিতেই পারি না, এত শক্তিশালী যে তার বাহুর দিকে তাকাতে ভয় পাই। তার লোলুপ দৃষ্টি সব সময় আমার ঘরের দিকে, কারণ আমি গরিব কিন্তু আমার ঘরে সুন্দরী বউ। এই অবস্থা হয়েছে স্বাধীনতার পরবর্তী আমার এদেশের। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরের পর পদ্মা মেঘনা যমুনা তোমার আমার ঠিকানা হয়ে যায়। এদেশের সাত কোটি জনগণ একই স্বাধীন সূর্যের আলোতে আলোকিত হয়ে যায়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সবকিছু সামলে নিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকে। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস শকুনির কু-দৃষ্টিতেই বারবার আমার বাড়িঘর তছনছ হতে থাকে। তারপরও বাঙালি বীরের জাতি সবকিছু সামলে নিয়ে যখন এগোতে থাকি ঠিক তখনই চলে আসে দেশপ্রেম, দেশদ্রোহী, মানবতাবিরোধীসহ আরো চটকদার অনেক কথা। এই কথাগুলি কোত্থেকে ভেসে আসে, কে বলাচ্ছে, কেন বলাচ্ছে, কাকে দিয়ে বলাচ্ছে আমি সব বুঝতে পারলেও বলতে পারিনা কারন আমি গরিব আমার ঘরে সুন্দরী বউ।
আমি সহায়-সম্বলহীন আমার স্বগোত্রের লোকজন অনেক দূর দেশে অবস্থান করে- বিধায় তারা আমার বিপদের সময় এগিয়ে আসতে পারে না। কিছুদিন ১৬৫০ কিঃমিঃ দূরে আমার এক স্বগোত্রীয় ভাইয়ের সাথে জোট বেঁধে ছিলাম। সেই স্বগোত্রীয় ভাই প্রতিবেশীর বাড়ির উপর দিয়ে যাতায়াত করত, ঐ সময়গুলোতে আমার বাড়ির হাঁস মুরগি কুকুর বিড়াল গরু ছাগল নির্বিবাদে বাড়ির আঙিনায়, সীমানায় চলাফেরা করত, কাজের লোকজন নির্বিবাদে নিজ নিজ কর্ম করতো, কারো পরোয়া করত না। আমার বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষীরা বীরদর্পে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকতো, সীমানা পাহারা দিত, তাদের কুচকাওয়াজ ও পায়ের বুটের আওয়াজে প্রতিবেশী দারোয়ান ভয়ে চুপসে যেত। তারা তাদের গার্ড রুম থেকে বের হওয়ার সাহস পেত না। প্রতিবেশীর দারোয়ান, রক্ষীরা সারাক্ষণ ভয় ভয়ে থাকতো, কখন আমার সীমান্তরক্ষীরা তাদের কান ধরে উঠবস করায়, বেয়াদবি করলে চাবকে পিঠের ছাল তুলে নেয়, এই ভয়ে অস্থির থাকতো। প্রতিবেশী এবং প্রতিবেশীর কর্মচারী কেউই আমার বাড়ির দিকে তাকানোর সুযোগই পেত না। আমার সুন্দরী বউ রাঙ্গা পায়ে ঘর থেকে বের হতো, রান্না করতো, দাওয়ায় বসে সকালের নরম রোদ পোহাতো, গোসল করে লম্বা কালো চুল শুকাতে দিতো, বাড়ির সীমানা পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়াতো কিন্তু প্রতিবেশীর কোন দামাল ছেলে আমার বাড়ির দিকে তাকানোর সাহস পেত না, ভয় পেত প্রচন্ড ভয় পেত।
কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস আমার প্রতিবেশী অনেক কৌশলে আমার কয়জন সহোদর ভাইকে হাত করে নিল, তাদেরকে বুঝালো তোমাদের ওই জ্ঞাতি ভাইয়ের জন্য তোমাদের সংসারে কোন উন্নতি হচ্ছে না। তোমাদের ভাগের ভাত মাছ সব খেয়ে যাচ্ছে, তোমরা অনাহারে মরছো, তোমাদের পাট বিক্রির টাকা নিয়ে যাচ্ছে ওর বড় বড় ঘর-বাড়ি তৈরি করতে। তোমাদের আখক্ষেত আর তোমরা চিনি খেতে পারছো না। তোমাদের চিনি দিয়ে ওর বাড়ির লোকজন পান্তা ভাত খাচ্ছে। দেখনা তোমাদের বাড়ি পাহারা দেওয়ার জন্য ওর বাড়ি থেকে দারোয়ান এনে বসিয়েছে। এতে তো তোমাদের আত্মমর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে ছিল তার উল্টো, ওই ভাই তার লোকজন দিয়ে টাকা পয়সা দিয়ে আমার বাড়িতে পাটকল, সুতার কল, বস্ত্রকল, চিনির কল, চায়ের বাগান আরো কত বড় বড় কল কারখানা তৈরি করেছে। আমার বাড়ির লোকজনদেরকে ঐ সমস্ত কলকারখানায় কাজ শিখিয়েছে। এমনকি আমার বাড়িতে নিরাপত্তা রক্ষীদের প্রয়োজনীয় অস্ত্র তৈরীর কারখানা পর্য্ন্ত স্থাপন করেছে। আমার পরিবার একান্তই কৃষিভিত্তিক পরিবার ছিল, ওই ভাইয়ের কারণেই কৃষিভিত্তিক পরিবারের ছেলেমেয়েরা, কল কারখানা, উৎপাদন, আমদানি রপ্তানি ব্যবসা বাণিজ্য শিখতে শুরু করে এবং আস্তে আস্তে আমার শিল্প বাণিজ্যের প্রসার ঘটে, বড় বড় শিল্প, কল-কারখানা গড়ে উঠে। আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকসহ বড় বড় ব্যবসায়ী হয়ে যায়। ওই ভাইয়ের কারণেই আমার বাড়িতে হাঁস মুরগি গরু ছাগল বেশ ভালই হিস্টপুষ্ট হচ্ছিল, বছর বছর বাচ্চা দিচ্ছিল। আমার বাড়ির দারোয়ান নিরাপত্তাকর্মীরা ভালো প্রশিক্ষণ পেয়ে চোর-ডাকাত দুষ্কৃতিকারী আধিপত্যবাদী, অর্থনৈতিক আগ্রাসন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল। আমার ছেলেরা সাহসী হয়ে উঠছিল। যার ভয়ে প্রতিবেশী আমার গৃহের দিকে হাত বাড়ানো তো দূরের কথা তাকানোর সাহস পেত না। এটাই ছিল আমার প্রতিবেশীর গায়ের জ্বালা। আমার ভাইদের কান ভারি করতে থাকলো। কিন্তু আমার ভাইয়েরা ছোট ছিল বিধায় তারা জানেনা আমার বাবা ও দাদাদের সাথে ওই বর্গী প্রতিবেশী কিরূপ আচরণ করেছে।
সে আর এক কাহিনী পুরনো দিনের কথা বলতে গেলে রাত দিন শেষ হবে না, প্রকৃতপক্ষে আমার পূর্বপুরুষরাই আমার প্রতিবেশীকে সভ্য বানিয়েছে, জ্ঞান, সামাজিকতা, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কলকারখানায় হাতেখড়ি দিয়েছে। আজকে আমার প্রতিবেশীর যে উন্নতি, যে ঐতিহ্য আভিজাত্য, তার সবকিছুই আমার পূর্ব পুরুষের অনুগ্রহের কারণেই হয়েছে। অতীত সবকিছু ভুলে আধিপত্যবাদের হাত সম্প্রসারিত করে সবসময় আমার দিকে নজর দিতে থাকে, খবরদারি করছে। তার আগ্রাসী আধিপত্যবাদী রক্তচক্ষু আমাকে ও আমার পরিবারকে সার্বক্ষণিক ঘিরে রেখেছে। তার এই মনোভাব আমি বুঝতে পারলেও আমার ছোট ভাইয়েরা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা অনেকেই মনে করে প্রতিবেশী তো বেড়াতে আসে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সে তার লোক বল দিয়ে সার্বক্ষণিক আমার পরিবারকে ঘিরে রাখে, নজরদারীতে রাখে। কিন্তু ভাব দেখায় প্রতিবেশীই তো বেড়াতে আসতে মানা আছে নাকি!
তার এই আধিপত্যবাদ আগ্রাসী মনোভাব, আমার পরিবারকে আস্তে আস্তে দ্বিধাবিভক্তির দিকে ধাবিত করে। এর প্রথম ধাপ হিসেবে আমার ছোট ভাইদেরকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে, নিজেদের উন্নতির কথা বলে, স্বাধিকারের কথা বলে, আত্মসম্মানের কথা বলে, বশ করে নিল। আমার ছোট ভাইয়েরা আমার সেই গোত্রীয় ভাইটিকে খেদানোর জন্য উঠে-পড়ে লাগলো। প্রতিবেশীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়, প্রতিবেশীর লোক বল দিয়েই আমার ওই গোত্রীয় ভাইটিকে বেধড়ক মার দিল। কারণ সে তো এখানে আমার বাড়িতে একা হয়ে পড়েছিল। সে এসেছিল আমাদের পরিবারের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য। আমার ছোট ভাইয়েরা যখন তার বিরোধী হয়ে গেল, তখন সে এখানে প্রতিবেসীর সাথে একা পেরে উঠবে কেন? বেধড়ক মার খেলো কান ধরে উঠবস করালো, তার দারোয়ান কর্মচারীদেরকে প্রতিবেশী ধরে নিয়ে গেল। পরে অবশ্য আমার ওই গোত্রীয় ভাইটির ভয়ে আমার প্রতিবেশী সন্ধি করে তার লোকজনদেরকে ছেড়ে দিয়েছে। স্বগোত্রীয় ভাইটি মার খেয়ে লজ্জায় শরমে সেই যে আমার কাছ থেকে চলে গেল, আর ফিরে আসার সুযোগ পেল না। কারণ সে তো থাকে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে।
স্বগোত্রীয় ভাইটি চলে যাওয়ার পরে আস্তে আস্তে আমার ছোট ভাইদের বোধোদয় হলো। আমি আস্তে আস্তে বুঝতে পারলাম কি সর্বনাশ করে ফেলেছি। নিজ গোত্র থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলাম। এতদিন আমার বাড়িতে ডাকাত আসতে পারত না, কারণ ওই স্বগোত্রীয় ভাইটির বাড়ি ডাকাতের বাড়ির পাশেই। আমার বাড়িতে কোন সমস্যা করলে আমার ওই স্বগোত্রীয় ভাইটির লোকজন ডাকাতের চৌদ্দগুষ্টিকে পিটিয়ে সোজা করে দিত। সেই ভাইটি তো আমাদের কারণেই ক্ষতবিক্ষত হয়ে লজ্জা শরমের বালাই মাথায় নিয়ে চলে গেছে। সে আর আমার জন্য ডাকাতের বাড়িতে হামলা করবেনা। আমার ওই স্বগোত্রীয় ভাইটি আসা-যাওয়ার মাধ্যমে আমার নিজ গোত্রের সাথে একটি সম্পর্ক ছিল। তা এখন চিরতরে বন্ধ হয়ে গেল। সে আমার ঘরের মাছ গোশত খেতো, কিন্তু সে আমার মান-সম্মান আমার বউয়ের ইজ্জত আব্রু রক্ষার জন্য জান কোরবান করত। সে কখনোই আমার সুন্দরী বউয়ের দিকে তাকাতো না, তার ছত্র ছায়ায় আমার সংসারের অবস্থা সে সময়ের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে খুব ভালই ছিল, আমার সাজানো গোছানো সংসার সবদিকেই ফুলে ফলে ভরে উঠতে ছিল। বরং আমার প্রতিবেশীর অবস্থা তখন করুন ছিল। ঠিক মতো খেতে পেত না। বেড়াতে গেলে বলতো দাদা খেয়ে এসেছেন তো, নাকি যেয়ে খাবেন। অন্য দিন আসলে খেয়ে যাবেন কিন্তু।
হঠাৎ করে সেই স্বগোত্রীয় ভাইটি দূরে সরে যাওয়ায় আমার সাজানো গোছানো সংসার থমকে দাঁড়ালো। তারপরও সেই স্বগোত্রীয় ভাইয়ের দেখানো পথে চলতে শুরু করেছিলাম। এতে অনেকটা নিরাপদ ছিলাম। এটাও সহ্য হলো না আমার প্রতিবেশীর। দেশপ্রেম দেশপ্রেম বলে বলে আমার ছোট ভাইদের খেপিয়ে তুলে সেই পথ থেকে বিচ্যুত করল। আমার স্বগোত্রীয় ভাইয়ের দেখানো পথ পরিহার করে প্রতিবেশীর কথামতো তার দেখানো পথেই চলতে শুরু করলাম। আমার প্রতিবেশী এরই অপেক্ষায় ছিল। যখন দেখলো আমার পাশে আর কেউ নাই। আমি প্রতিবেশীর ফাঁদে পা দিয়েছি, তার দেখানো পথে পথ চলছি। আমার গোত্রীয় লোকজন বন্ধুবান্ধব সব অনেক দূর দেশে, যারা আমাকে বিপদের সময়ে কোন উপকার করতে পারবে না, কথা বলতে পারবে না, আমার জন্য লাঠি হাতে নিতে পারবে না। শুধু আমার বিপদ শুনে দূর দেশে বসেই দীর্ঘশ্বাস ছাড়তে পারবে, চোখের জল ফেলবে এটুকুই। আমার প্রতিবেশী এটাই তো চায়। সবদিক থেকে নিশ্চিত হয়ে সে এখন আস্তে আস্তে আমার ঘরের দিকে এগিয়ে আসতে থাকলো। কারন আমি গরিব সহায় সম্বলহীন কিন্তু ঘরে আমার সুন্দরী বউ।
আমার স্বগোত্রীয় ভাইটি চলে যাওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী প্রতিদিনই কোন না কোন ছলনায় আমার বাড়ির হাঁস মুরগি কুকুর বিড়াল গরু-ছাগল দেখলেই লাঠি হাতে তাড়াতে লাগলো। সুযোগ পেলে ধরার চেষ্টা করতে থাকলো। আমার কাজের লোকজন, নিরাপত্তাকর্মী, তাদেরকেও কথায় কথায় চড়-থাপ্পড় মারতে লাগল। আমার কিষান, বাজারের লোকজনকে ধরে নিয়ে যেতে লাগলো। এমনকি মাঝে মাঝে ২/১ জন কে মেরে ফেলতে লাগলো, কিন্তু আমি ভয়ে কিছু বলতে পারি না। পাহাড়ি ঝর্ণার পানি প্রতিবেশী বাড়ি হয়ে আমার বাড়িতে আসতো। আমার ভাইটি চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সে পাহাড়ি ঝর্ণার পানি আটকে দিল। আমার খাল-বিল শুকিয়ে গেল, বউ বেটির ঝর্ণার পানিতে গোসল করা বন্ধ হয়ে গেল। নৌকা চরে আটকে গেল, খাল-বিল সব ভরাট হয়ে গেল। আবার বর্ষা মৌসুমে সকল পানির উৎস মুখ খুলে দিয়ে বন্যায় আমার বাড়ি ঘরকে ভাসিয়ে দিলো। আমার বাড়ির লোকজন গৃহপালিত পশু ফলবান বৃক্ষ বন্যার পানিতে ডুবে যায়, দিনের পর দিন লোকজন পানিবন্দি হয়ে থাকে। এই কথা বাইরের দুনিয়ার মানুষকে বলার চেষ্টা করলে কিংবা বিচার দিতে চাইলে সে আমার দিকে রক্তচক্ষু করে তাকায় হুমকি-ধামকি দিতে থাকে, হ্যাং করেঙ্গা তেং করেঙ্গা। আমি তার ভয়ে চুপসে যাই। গ্রামের মাতবরের কাছে বিচার দেওয়ার সাহস পাই না। কারণ গ্রামের মাতবরের সাথে তার অনেক ভাব। আমার গুষ্টির লোকজন গ্রামে থাকে না, এ জন্য গ্রামের মাতবর আমাকে তেমন গুরুত্ব দেয় না। আমি একেবারে অসহায় হয়ে পড়েছি, আমি কাউকে বলতে পারিনা, সইতে পারিনা কারন আমি গরিব আমার ঘরে সুন্দরী বউ।
আমার স্বগোত্রীয় ভাইটি একসঙ্গে থাকাকালীন আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্য কৃষ্টি কালচার অনুযায়ী সুস্থ সাংস্কৃতিক ধারা আমার বাড়িতে চর্চা হতো। ভাইটির ভয়ে সে আমার বাড়িতে অপসংস্কৃতির আগ্রাসন চালাতে সাহস পেত না। কিন্তু এখন প্রতিবেশী সুযোগ পেয়ে তার বাড়ির উলঙ্গ অর্ধউলঙ্গ নর্তকি গায়িকাদেরকে আমার বাড়ির উঠানে অশ্লীল গান বাজনা করার জন্য পাঠাতে লাগলো। তার বাড়ির গান বাজনা ঢাক ঢোলের শব্দে আমার বাড়ির লোকজনের কান ঝালাপালা হয়ে গেল। আমার ছেলে পেলে বউ বেটিরা এই গান-বাজনা শুনে, সিরিয়াল দেখে আসক্ত হয়ে পড়ল। নিজেদের ইতিহাস ঐতিহ্য তাহজিব তামাদ্দুন ভুলে যেতে লাগলো। অপসংস্কৃতি বিভীষিকায় আমার বাড়ির পুরো পরিবেশকে নষ্ট করে দিলো, তবু আমি কোনো প্রতিবাদ করতে পারছিনা। কারণ আমি গরিব আমার ঘরে সুন্দরী বউ।
আরেকটি বিষয় আমি কাউকে কিছু বলতে পারি না আমার বুক ফেটে যায়, ইলিশ মাছের মৌসুমে কি হয় জানেন ? দুঃখে আমার প্রাণটা খান খান হয়ে যায়। আমার ছেলে মেয়েরা যখন ইলিশ মাছ দিয়ে ভাত খেতে বসে তখন প্রতিবেশী ওপার থেকে এমন ভাবে আমার প্রতি চোখ রাঙায়, ইলিশ মাছের জন্য হুমকি ধামকি করে আমি বাধ্য হয়ে আমার ছেলে মেয়ে নাতি-পুতিদের পাত থেকে ইলিশ মাছের টুকরা উঠিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হই। ইলিশের জন্য আমার ছোট ছেলেমেয়েরা নাতিপুতিরা কান্নাকাটি করে আর ভাত খেতে চায় না। তখন আমার বউ বলে কি আর করবি ইলিশ খেতে হবেনা, ইলিশের ঝোল পেয়েছো, ইলিশের গন্ধে গন্ধে ভাত খেয়ে নাও। আমার ছেলেমেয়েদের পাতের ইলিশ নিয়ে নেয় কিন্তু আমার অভাবের সময় দুটো পিঁয়াজ ও দিতে চায়না। সে আমার বাড়ির রাস্তা ব্যবহার করে বাইরের হাট বাজার থেকে মালামাল খরিদ করে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। তার বড় বড় গাড়ির চাকার চাপে আমার রাস্তা ঘাট ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়লে সে বলে আসো টাকা ধার দেই, রাস্তা ঘাট ব্রিজ ঠিক করে নাও, ধারের টাকা সুদে আসলে যথাসময়ে শোধ দিতে না পারলে এর জন্য আমাকে অনেক চড়া মূল্য দিতে হয়। শুধু তাই নয়, এখন আমার বাড়ির ভিতর দিয়ে রেল লাইন বসিয়ে তার রেলগাড়ী চলাচলের রাস্তা চাচ্ছে, না দিলে কি যে করবে, কাউকে কিছু বলতে পারি না, কিছু করতে পারিনা, কারন আমি গরিব, আমি অসহায়, আমি নিঃসঙ্গ, আমার সম্পদ, আমার ঘরে সুন্দরী বউ।
শুধু আমার বাড়ির রাস্তা নয়, আমার বাড়ির নদীর ঘাটে তার অনেক বড় বড় বাণিজ্যিক নৌকার ভিড়ে। সেসময় ঘাটে আমারও বাণিজ্যিক নৌকা থাকে ঘাটের শ্রমিকরা আমার নৌকার মালামাল খালাস করতে থাকলে সে জোরপূর্বক আমার নৌকার মালামাল খালাস বন্ধ করে দিয়ে তার নৌকার মালামাল আগে খালাস করতে বাধ্য করে। অনেক সময় তাঁর বাণিজ্যের নৌকা আমার ঘাট দখল করে রাখে, আমার নৌকা ঘাটে ভিড়তে পারে না। আমার নৌকা সময় মত ঘাটে ভিড়তে না পারায় সময়মতো মালামাল খালাস করতে না পারায় আমার বাড়িতে নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল এর ঘাটতি পড়ে যায়, অথচ আমার কেনা মাল আমার নৌকায় মাঝ নদীতে আটকা পড়ে আছে, তার নৌকার কারণে ঘাটে ভীড়তে পারতেছে না। তার বড় বড় নৌকার ঘষায় আমার ঘাট দুমড়ে-মুচড়ে রায়, আমার ঘাট মেরামতের খরচ বেড়ে যায়, কিন্তু সে আমাকে এর জন্য কোন টাকা দেয় না। সে বরাবরের মতো ফ্রী ব্যবহার করতে চায় আমি প্রতিবাদ করলে সে বলে, তুমি এত ছোটলোক, তোমার কোন আত্মসম্মান নেই, তুমি প্রতিবেশীর মান-মর্যাদা বোঝনা, তুমি এত কিপ্টা, তুমি এত অসামাজিক, তোমার ঘাটে আমার নৌকা ভীড়ে, মালামাল খালাস করে, মালামাল উঠানো হয়, এজন্যই টাকা চাইতে তোমার লজ্জা লাগেনা । আমি কাউকে কিছু বলতে পারি না, আমার ভাই বেরাদার আত্মীয়-স্বজন আমার আশেপাশে কেউ থাকেনা, আমি একা হয়ে পড়েছি আমি দুর্বল আমি অসহায় কিছু করতেও পারি না কারন আমি গরিব আমার ঘরে সুন্দরী বউ।
এমনিভাবে আমার প্রতিবেশী তার লোলুপ দৃষ্টি দিয়ে, বাহুরশক্তি দিয়ে, বাকপটুতা দিয়ে বিভিন্নভাবে আমার উপর আধিপত্যবাদী আগ্রাসন চালাতে থাকে। সে এমন ভাবে সাঁড়াশি দিয়ে আমার টুটি চেপে ধরেছে যে আমি মুক্ত হওয়ার জন্য যতই ছটফট করি না কেন কোন ভাবেই তার সাঁড়াশি আক্রমণ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারছিনা। আমাকে উদ্ধার করার জন্য, রক্ষা করার জন্য আমার গোত্রীয় কেউ এগিয়ে আসতে পারছেনা। এই অবস্থা দর্শনে আমার ছোট ভাইয়েরা যখনই তাদের ভুল বুঝতে পারে তখনি সে কৌশলে আমার ভাইদের কানে কানে দেশপ্রেমের বিষ ঢেলে দেয়। আমার ভাইয়েরা কখনোই যেন একজোট হয়ে একতার শক্তি অর্জন করে তার আধিপত্যবাদ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে না পারে, এজন্য তার পেশাদার লোকজনকে দিয়ে আমার ভাইদের মাঝে সব সময় ঝগড়া বিবাদ আন্তঃকোন্দল লাগিয়ে দেয়। তার প্রশিক্ষিত লোকজন দিয়ে আজকে পঞ্চাশ বছর পরেও আমার সেই স্বগোত্রীয় ভাইটি আমার ভাগের ভাত খেয়ে যাওয়ার কথা বারবার নিয়ে আসতে থাকে। যাতে আমার ভাইয়েরা প্রতিবেশীর চতুর্মুখী ষড়যন্ত্রের কথা নির্যাতনের কথা জুলুম শোষন, ডাকাতি রাহাজানির কথা কাউকে বলতে না পারে।
আমার প্রতিবেশীর আরেকটি ভয় আছে আপনাদেরকে কানে কানে বলি কাউকে বলবেন না প্লিজ। প্রতিবেশীর বাড়ির লোকজন ভীতুর ডিম, তাদের শরীরে শক্তি অনেক কম, মনের বলতো একেবারেই নেই, তার ওপর আছে আবার জাত পাতের ভেদাভেদ। এমন অসভ্য এখনও রাস্তাঘাটে খেতের আইলে বন-বাদাড়ে হিসু-টিসু করে। এসব কারণে তার একেক ঘরে একেক ধরনের রান্না হয়, একেক ঘরের মানুষ একেক ধরনের পোশাক পরে, ভিন্ন ঘরের মানুষের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ভিন্ন ভিন্ন ধরনের। এসব কারণে তার বাড়ির লোকজনের একতার শক্তি খুব কম, মতভেদ ছোট-বড় স্পর্শ আস্পর্শ গৃহবিবাদ সব সময় লেগে আছে। সে লাঠি হাতে বিভিন্ন ঘরের লোকজনকে সব সময় তাড়িয়ে বেড়ায়, মাইরের ভয়ে ঘরের লোকজন চুপচাপ থাকে, কিন্তু একটি সুযোগ পেলেই ভিন্ন হয়ে যাবে। এই ভয়ে সে সারা বাড়ি সব সময় লাঠি হাতে ঘুরে। সামান্য একটু সুতা নাতা পেলেই নিজের বাড়ির লোকজনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে, ঘর থেকে বের করে দিতে চায়, আরো কত কি কাউকে বলবেন না প্লিজ। আমি অসহায় গরীব ঘরে আমার সুন্দরী বউ। আরেকটি গোপন কথা জানেন আমরা ঐ স্বগোত্রীয় ভাইটি যখন আমার বাড়িতে যাওয়া আসা করত আমার বাড়িতে থাকতো তখন প্রতিবাসির দারোয়ানরা ভয়ে বাড়ির সীমানায় এসে দাঁড়াতে পারত না। সীমানা থেকে এক দেড় কিলোমিটার দূরে অবস্থান করতো। আমাদের একজন দারোয়ান গিয়ে সীমানা পিলারের কাছে দাঁড়ালে ওর দারোয়ান গুলো ভেড়ার পালের মত ভয়ে পালিয়ে যেত। এই ভয়টাই ওকে কুরে কুরে খায়, আর মনের মধ্যে সেসব দিনের স্মৃতি জেগে ওঠে। সে সব সময় দিবা স্বপ্ন দেখে এই বুঝি আমার স্বগোত্রীয় ভাইটি আবার আমার বাড়িতে চলে এসেছে কিংবা যাওয়া আসা শুরু হয়েছে। যদিও আমার স্বগোত্রীয় ভাইটির আমার বাড়ির দেখ ভাল করার কিংবা যাওয়া-আসা করার পথ চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ ও তো নাকে খত দিয়ে চলে গেছে ওর আসার পথ চিরদিনের জন্যই বন্ধ। তারপরও প্রতিবেশীর ভয় কি জানেন যেহেতু আমার জ্ঞাতি ভাই আমার বাড়িতে আসতে না পারুক,দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে থাক, যদি তার সাথে আমার আত্মরক্ষার দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়ে যায়। ফলে ওই স্বগোত্রীয় ভাইটির মাধ্যমে আমার বংশের অন্যান্য সকলের সাহায্য পেয়ে আমার হাতের পেশী শক্তিশালী হয়ে উঠবে। তাহলে তো আমরা দুজন এমনভাবে আমার প্রতিবেশীকে দুই পাশ থেকে চেপে ধরবো যে, ভিক্ষা চাইনা কুত্তা ঠেকা, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা হতে দুদিন সময় ও লাগবে না। বর্তমানকালে প্রতিবেশী যেমনে আমার গলায় সাঁড়াশি লাগিয়ে বসে আছে তেমনি উল্টো তার গলার সাড়াশির হাতল আমাদের দুই ভাইয়ের হাতে থাকবে। আমরা দুই দিক থেকে চাপ দিলেই তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে জিহবা বেরিয়ে যাবে, একটু আলগা করলে নিঃশ্বাস নেবে কিন্তু হাপানো আর বন্ধ হবেনা, এটা ও ভালভাবেই বুঝে। তাঁর আরও ভয় আছে সেটা হল তার যা যন্ত্রপাতি আছে আমার স্বগোত্রীয় ভাইটির ও তাই তাই আছে। আমার স্বগোত্রীয় ভাইটির বাড়ির লোকজন, দারোয়ান দৈত্য দানবের মত। পৃথিবী বিখ্যাত নামকরা, এমনিতেই ওদের নাম শুনলেই প্রতিবেশীর দারোয়ানদের পশ্চাদ্দেশ দিয়ে গরম তরল নির্গত হয়, তার উপর যদি আবার আমার সাথে দ্বিপাক্ষিক আত্মরক্ষার চুক্তি হয়, তাহলে ওদের ভূমিকম্প শুরু হয়ে যাবে।
মূলত এই কারণেই প্রচণ্ড ভয় থাকে। কখন যে আমার বাড়ির লোকজন প্রতিবেশীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করে, স্বগোত্রীয় ভাইটির সাথে দ্বিপাক্ষিক আত্মরক্ষা চুক্তি করতে বাধ্য করে। তাহলে ওর এত কষ্ট এত কু-বুদ্ধি করে আলাদা করে দেওয়া সব নষ্ট হয়ে যাবে। এইজন্যই সে সব সময় আমার বাড়িতে মাঝে মাঝে নর্তকী লালপানি পাঠিয়ে দিয়ে কিছু লোককে বোকা বানিয়ে রাখে। কিছু লোকের মাথা কিনে নিয়ে বুদ্ধি বের করে তাদের গো-মাতার বর্জ্য ভরে দিয়েছে। যে কারণে ওই বর্জ্য জীবিরা সব সময় আমার বাড়িতে খালি চেতনা চেতনা, দেশ প্রেম, দেশ প্রেম, ইত্যাদি বলে আমার পরিবারের সদস্যদের কান ঝালাপালা করে। নতুন প্রজন্ম যারা অতীতের ইতিহাস জানে না তাদেরকে স্বগোত্রীয় ভাইটির উপর খেপিয়ে রাখে। প্রতিবেশীর কিছু জ্ঞাতিগোষ্ঠী আমার বাড়িতে থাকে, ঘনঘন যাওয়া আসা করে তাদেরকে দিয়ে সব সময় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র পাকাতে থাকে। যাতে কখনোই স্বগোত্রীয় ভাইটির সাথে দ্বিপাক্ষিক আত্মরক্ষা চুক্তি দিকে ধাবিত না হতে পারি। এসব অত্যন্ত গোপন কথা কাউকে বলবেন না প্লিজ, কারণ জানেনই তো আমি গরিব আমি অসহায় আমার ঘরে সুন্দরী বউ।
মুলত এ কারণেই এতদিন পরেও সময় সুযোগ বুঝেই স্বগোত্রীয় ভাইটির বদনাম বা বিরোধীতার কথা বলতে থাকে। কিন্তু অনেকদিন হয়ে গেছে আমার বাড়ির মানুষ প্রতিবেশীর চক্রান্ত বুঝতে পেরেছে। তারা বুঝতে পেরেছে ঐ স্বগোত্রীয় ভাইটিকে আমাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে একা করে দিয়েছে। এরপর থেকে প্রতিবেশী যখন তখন আমার উপর চড়াও হচ্ছে। সে আমার নিজস্ব নিয়ম এর উপর হস্তক্ষেপ করছে, আমার বাড়ির পাহারাদারদের মারধর করছে হত্যা করছে, আমার রাস্তা ঘাট, রেল-লাইন জোর করে ব্যবহার করছে, ঝরনার পানি আটকে দিয়ে আমার খাল-বিল শুকিয়ে দিচ্ছে, আমার খাল-বিল থেকে জোরপূর্বক মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে, এবং মাঝে মাঝে তার নিজস্ব সন্ত্রাসী পাঠিয়ে দিয়ে আমার বাড়িতে গন্ডগোল সৃষ্টি করছে, আর আমার সুন্দরী বউ ঘর থেকে বেরোতে পারছে না। আমার ভাইয়েরা এটা আস্তে আস্তে বুঝতে পারছে। কিন্তু তারা দীর্ঘ্ দিন আরাম আয়াসী জীবন কাটাবার ফলে মানসিক ভাবে এতটাই দূর্বল যে প্রতিবেশীর সঙ্গে চড়া কথা বলতেই সাহস পায় না। আমার বাড়ির লোকজন প্রতিবেশীর সকল ষড়যন্ত্র ও ধোকা ধরে ফেলেছে। আমার ভাইয়েরা নিজেদের আত্ম-সম্মান, সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনার জন্য বাড়ির লোকজনদেরকে নিয়ে আস্তে আস্তে জোট বাঁধতে শুরু করছে। আগামী দিনে হয়তো তারা মরণপণ লড়াইয়ের শপথ নেবে, আমার সুন্দরী বউয়ের ইজ্জত রক্ষা করার জন্য, প্রতিবেশীর কড়াল গ্রাস থেকে রক্ষা করার জন্য, সময় বলে দেবে তাদের এ লড়াই কতটুকু সফল হবে। আমারা আশায় বুক বেধেঁ বারবার তাকিয়ে দেখছি আমাদেরকে রক্ষা করার জন্য কোন মোহাম্মদ ইবনে কাসিম, সুলতান মাহমুদ, মোহাম্মদ ঘুরি বা আহমেদ শাহ আবদালির বংশধরেরা এগিয়ে আসে কিনা?